এ বিষয়ে বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয়া হয়। একই সাথে ডিবি ও পিবিআইকে দিয়ে চুরির ঘটনা তদন্ত করার অনুরোধ করেছেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী।
চিঠিতে বলা হয়, গত ৮ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী, সরকারি ছুটি এবং ঘূর্ণিঝড় বুলবুল চলাকালে বেনাপোল কাস্টম হাউসের মূল্যবান শুল্ক গুদামের নিরাপদ ভোল্ট ভেঙে ১৭ কেজি সোনা চুরি করে দুর্বৃত্তরা। কিন্তু গত ১১ দিনেও স্বর্ণ উদ্ধার ও চোর শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় গত ১১ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। কাস্টমস, পুলিশ, ডিবি, পিবিআই ও র্যাবের ইনভেন্ট্রি অনুযায়ী শুল্ক গুদাম থেকে ১৬ হাজার ৫৮৮.৪৩ কেজি স্বর্ণ, ১৯ হাজার ২৩০ ভারতীয় রুপি এবং ৩৭ হাজার বাংলাদেশি টাকা চুরি যায়।
চুরির ঘটনা জানার পরপরই কমিশনার ভোল্টের গোডাউনের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সর্দারকে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যকে অবহিত করা হয়। বন্ধের সময় কর্মরত চার সিপাইকেও দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশ, পিবিআই, গোয়েন্দা, ডিবি, সিআইডি, এনএসআইসহ সকল সংস্থাকে তাৎক্ষণিক সম্পৃক্ত করা হয়। তাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।
যুগ্ম কমিশনার শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, কাস্টম হাউস ও চেকপোস্টের সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদারসহ মূল্যবান গুদাম পাহারার জন্য পৃথক সিপাই ও আনসার পদস্থ করা হয়েছে।
এব্যাপারে বন্দর থানা পুলিশ জানায়, বহিরাগত ব্যক্তিদের মধ্যে আজিবর রহমান, মো. সুরত আলী, মহব্বত হোসেন, আসাদুজ্জামান, আলাউদ্দিন, সুলতান, আবুল হোসেন, টিপু সুলতান, ইমরান হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ডিবি পুলিশ। এদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন সময়ে গুদাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। শুল্কগুদামের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সিপাই ও আনসার সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে চুরি যাওয়া স্বর্ণের পরিমাণ ১৯ হাজার ৩১৮ কেজি বলা হয়। পরবর্তীতে ইনভেন্ট্রি করে দেখা যায়, শুল্কগুদামে ১৯৭৩ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আটককৃত বিভিন্ন দেশের বিপুল পরিমাণ মুদ্রা, রূপা ও রৌপ্যসাদৃশ্য বস্তু, স্বর্ণের গহনা ও স্বর্ণের বার, ঘড়ি, ইমিটেশনসহ আরও অন্যান্য মূল্যবান জিনিস রক্ষিত থাকলেও পুরাতন জিআরের কোনো স্বর্ণ চুরি হয়নি। শুধুমাত্র ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আটককৃত স্বর্ণই চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া ১৬ হাজার ৫৮৮ কেজি স্বর্ণ এআরও বিশ্বনাথ কুন্ডু দায়িত্বে থাকাকালীন গুদামে জমা হয়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুজ্জামান জানান, রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির দুঃসাহসকারী দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার না করলে এ ধরনের ঘটনার পুণরাবৃত্তি হবে।